আমি: প্রথমে বলো, তুমি কেন মুসলিম?
আপু: আমার ধর্ম ইসলাম। আমার মুসলিম পরিবারে জন্ম, সেজন্যই আমি মুসলিম।
আমি: মানে এইটা তোমার নিজের সিদ্ধান্ত ছিল না?
আপু: হা হা! আমি তো জন্মেছিই মুসলিম হিসেবে। আর একজন মুসলিম হিসেবে আমি গর্বিত। আমি লাকি যে অন্য কোনো ধর্মের ফ্যামিলিতে আমার জন্ম হয়নি।
আমি: মুসলিম হিসেবে জন্ম! জন্মানোর সময় আবার ধর্ম থাকে নাকি!
আপু: মোটেও না। মুসলিম পরিবারে জন্ম হয়েছে। আমার আব্বু-আম্মু মুসলিম। আর আমি সেই অনুশাসনের সেই পথে চলে আমিও মুসলিম। মনে করো, আজ যদি আমার কোনো হিন্দু বা খ্রিস্টান ফ্যামিলিতে জন্ম হতো তাহলে আমার ধর্মও অন্য হতো।
আমি: আচ্ছা, থাকুক ওসব। বলতো ধর্ষণ কারা করে?
আপু: ওগুলো পশু আর বিবেকবর্জিত মানুষ। জৈবিক চাহিদা মেটায় ঐভাবে। কিন্তু ওরা আদৌ মানুষ না।বিকৃত মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠে।আর এই ধরণের বাজে মানসিকতা সবার না। যারা নারীদের সম্মান করেনা, তারাই এসব করে।
আমি: আচ্ছা বুঝলাম। মনে করো দেশে যুদ্ধ চলছে। আমাদের শত্রুপক্ষ জিতে গেছে। তুমি বিবাহিত এবং তোমার স্বামী এখনো বেঁচে আছে।তোমার নিকটাত্মীয়ের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধে মারা গেছে বা শত্রুপক্ষ মেরে ফেলেছে। শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তোমাকে তুলে নিয়ে গেলো। তারপর ওদের মধ্যে কেউ তোমার সাথে সেক্স করতে চাইলো। এখন তোমার সিদ্ধান্ত বা অভিমত জানাও।
আপু: অবশ্যই আমার সিদ্ধান্ত ‘না’বাচক হবে। কারণ প্রথমেই আমার দেশ।আমি আমার দেশের শত্রুদের সাথে কখনোই সেক্স করতে পারব না। দরকার হলে আমি তাদের হত্যা করার চেস্টা করব।
আর আমি একজন নারী, আমার সঙ্গী অর্থাৎ স্বামী তখনও জীবিত। এসময় মরে গেলেও আমি আমার শত্রুদের সাথে এহেন কাজে জড়াতে পারব না।
আমি: আচ্ছা, মনে করো এই সৈন্যদল তোমার নিজের দেশের। ওরা অন্যদেশের কোনো নারীর সাথে এরকম ব্যবহার করেছে। এবার তুমি কি বলবে?
আপু: তাও বলব ঠিক করেনি। নারীর সম্মান সব ক্ষেত্রেই দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে ওদের শাস্তি পাওয়া উচিত।
আমি: ওই সৈন্যদলের প্রধাণ যদি সৈন্যদের ওইকাজে নির্দেশ দেয় তাহলে তার সম্পর্কে তুমি কি বলবে?
আপু: তারও শাস্তি পাওয়া উচিত। ওনার কাজ শত্রুদমন করা। কোনো নারীর উপর অন্যায় অত্যাচার করা না।
আমি: আচ্ছা, যদি এই ব্যক্তি কোনো ধর্মনেতা হয়?
আপু: ধর্মনেতা হলে তার বোঝা উচিত ধর্মে নারীকে সম্মান দিতে বলা হয়েছে। সে জেনেশুনে এরকম অন্যায় করলে তার শাস্তি প্রাপ্য।
আমি: যদি ওই ধর্মের ঈশ্বর নিজেই এই নির্দেশ দেয়?
আপু: হা হা হা। শোনো কালু , কোনো ধর্মের ঈশ্বর এরকম আজেবাজে আদেশ দিবেনা। যদি দেয় তাহলে সে ভন্ড।
আমি: ভেবে বলছো তো?
আপু: হ্যাঁ, অবশ্যই।
আমি: উবায়দুল্লাহ ইব্ন উমর ইব্ন মায়সার…… আবূ সাঈদ আল খুদ্ররী(রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ(স) হুনায়নের যুদ্ধের আওতাস নামের একটি স্থানে সৈন্য প্রেরণ করেন। তারা তাদের শত্রুদের সাথে মুকাবিলা করে তাদের হত্যা করে এবং তাদের উপর বিজয়ী হয়। আর এই সময় তারা কয়েদি হিসেবে (হাওয়াযেন গোত্রের) কিছু মহিলাকে বন্দি করে। তখন রাসুলুল্লাহর কিছু সাহাবি তাদের সাথে অন্যায়ভাবে সহবাস করতে ইচ্ছা করে , কেননা তাদের স্বামীরা ছিল মুশরিক। তখন আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতটি নাজিল করেন-
” যে সমস্ত স্ত্রীলোকদের স্বামী আছে তারা তোমাদের জন্য হারাম। তবে যারা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী এবং যারা যুদ্ধবন্দী হিসেবে তোমাদের হাতে আসবে তারা ইদ্দত(হায়েয) পূর্ণ করার পর তোমাদের জন্য হালাল।”
– সহিহ আত তিরমীযি, ২১৫২
মজার ব্যপার হলো ওই হাদিসটি পাঠানোর পর এই আপু আর কোনো কথা বলেননি। মডারেট মুসলিম হওয়ায় অন্যান্যদের মত তিনিও প্রথমে নিজের ধর্মের যথেষ্ট গুণগান গেয়ে পরে নিজের ধর্ম, নবী এবং আল্লাহকে নিজেই যে কটু কথা বলেছেন তা বুঝতে পেরে না জানি কতবার উনি তওবা করেছেন।
যা হোক, সেটা তার ব্যপার। কিন্তু আসল ব্যপার হচ্ছে এই মডারেট গোষ্টি সর্বদাই সচেষ্ট বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠীকে অনৈসলামিক প্রমাণ করতে। এক একটা জঙ্গী হামলার পর এদের সরব হতে দেখা যায়। এদের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, “জঙ্গীরা কেউ মুসলমান না। এদের কোনো ধর্মও নেই।” অথচ নিজেদের ধর্মগ্রন্থ পড়ে দেখার সামর্থ হয়তো এদের নেই।
কোরান, হাদিসে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে সরাসরি বিধর্মী এবং অবিশ্বাসীদের হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমনকি ইসলাম ত্যাগীকে হত্যা করতে সরাসরি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। তবুও মডারেটগণ বলতেই থাকে, ” ইহা সহিহ ইসলাম নহে।”
খুব জানতে ইচ্ছা করে কোরান, হাদিসের ইসলাম যদি সহিহ ইসলাম না হয়, তাহলে মডারেটগণ সহিহ ইসলাম কাকে বলে?
গুলশান কান্ড যারা ঘটিয়েছে
গুলশান কান্ড যারা ঘটিয়েছে তারা সহীহ ইসলাম সম্মত কাজ করেছে,এদের বিরোধিতা যারা করবে তাদের বরং মুনাফিক বলা যেতে পারে অবলীলায়…
পবিত্র গ্রন্থে পরিস্কার বলা আছে,
গুলশানের তরুন জিহাদি ভাইয়েরা তো এগুলা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে,নয় কি??
সমস্যা হচ্ছে যুদ্ধবন্দী
সমস্যা হচ্ছে যুদ্ধবন্দী সম্পর্কে আপনার জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। এবং শূন্য জ্ঞান নিয়ে আপনি কাহিনী ফেদে বসেছেন। দীর্ঘ আলোচনা করতে পারতাম। কিন্তু এখন সময় নষ্ট করতে ইচ্ছা করছে না। নীচে কোরানের আয়াতগুলোতে স্পস্ট করে যুদ্ধবন্দী নারী আর পুরুষের সাথে কিরকম ব্যাবহার করতে হবে সেটা স্পস্ট করে বলা হয়েছে-