আগের দুটি পর্বে বলা হয়েছিল কিভাবে একটা শিশুর মাথায় জঙ্গিবাদের বীজ বুনেছিলেন ও সেই বীজের উর্বর ভূমি তৈরী করেছেন। এবার সেই ভূমিতে কিভাবে বাড় বাড়ন্ত আকারে জঙ্গি উৎপাদিত হবে , সেটা বলা হবে বিস্তারিতভাবে। ইসলাম ধর্মের ওস্তাদরা যারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েম করতে চায়, এবার আপনার সন্তানকে প্রথমেই যে আয়াতটা দেখায় সেটা হলো – কোরান বলছে –
আগের দুটি পর্বে বলা হয়েছিল কিভাবে একটা শিশুর মাথায় জঙ্গিবাদের বীজ বুনেছিলেন ও সেই বীজের উর্বর ভূমি তৈরী করেছেন। এবার সেই ভূমিতে কিভাবে বাড় বাড়ন্ত আকারে জঙ্গি উৎপাদিত হবে , সেটা বলা হবে বিস্তারিতভাবে। ইসলাম ধর্মের ওস্তাদরা যারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েম করতে চায়, এবার আপনার সন্তানকে প্রথমেই যে আয়াতটা দেখায় সেটা হলো – কোরান বলছে –
সুরা নিসা -৪: ৯৫: গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন।
তার মানে যারা নিজের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে , তারাই হলো শ্রেষ্ট মুসলমান আর তাদের মর্যাদা সাধারন মুসলমান যারা ঘরে বসে বসে আল্লাহ আল্লাহ করে , তাদের চাইতে অনেক উপরে। সেই জিহাদ কিভাবে করতে হবে , সেটাও বলা আছে কোরানে খুবই সুন্দরভাবে —
সুরা তাওবা -৯:৫: অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সুরা তাওবা -৯: ২৯: তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।
তার মানে অমুসলিমদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে , তারা যদি ইসলাম গ্রহন না করে , তাহলে তাদের ওপর আক্রমন করে জোর করে তাদেরকে ইসলাম গ্রহন করতে বাধ্য করতে হবে , যদি না করে , তাহলে তাদেরকে হত্যা করতে হবে। তখন আপনার সন্তানের গায়ের রক্ত কিন্তু টগ বগ করে ফুটতে থাকে , কারন সে তো উত্তেজনা যায় তার তাজা তরুন বয়েসে। আর সেই উত্তেজনা প্রশমনের রাস্তা যদি ইসলামের জন্যে হয় , তাহলে তো সোনায় সোহাগা। তখন ওস্তাদরা আপনার সন্তানকে উক্ত আয়াতগুলোর আরও ভাল অর্থ দেখায়, যা খোদ মুহাম্মদ নিজেই করে গেছেন , যেমন –
সহিহ মুসলিম :: খন্ড ১ :: হাদিস ৩০:
আবু তাহির, হারমালা ইবন ইয়াহইয়া ও আহমাদ ইবন ঈসা (র)……আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই – এ কথার সাক্ষ্য না দেওয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি । সূতরাং যে কেউ আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই স্বীকার করবে, সে আমা হতে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীআতসম্মত কারণ ব্যতীত । আর তার হিসাব আল্লাহর কাছে ।
সহিহ মুসলিম :: খন্ড ১ :: হাদিস ৩১:
আহমাদ ইবন আবদ আয-যাবিব (র)………আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই,-এ কথার সাক্ষ্য না দেওয়া পর্যন্ত এবং আমার প্রতি ও আমি যা নিয়ে এসেছি তার প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি । এগুলো মেনে নিলে তারা তাদের জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে, তবে শরীআতসম্মত কারণ ছাড়া ।আর তাদের হিনাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে ।
সহিহ বুখারী :: খন্ড ১ :: অধ্যায় ২ :: হাদিস ২৪
আবদুল্লাহ্ ইব্ন মুহাম্মদ আল-মুসনাদী (র) ………… ইব্ন উমর (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্(সা) ইরশাদ করেনঃ আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য আদিষ্ট হয়েছে, যতক্ষন না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই ও মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ্(সা) আল্লাহ্র রাসূল, আর সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয়। তারা যদি এ কাজগুলো করে, তবে আমার পক্ষ থেকে তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করল; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারন থাকে, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহ্র ওপর ন্যস্ত।
তার মানে কোরান ও হাদিস বলছে , অমুসলিমদেরকে বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে , সেই পর্যন্ত যতক্ষন না তারা ইসলাম গ্রহন করে। বিষয়টা এমন না যে অমুসলিমরা আপনাকে আক্রমন করতে আসছে বলে আপনি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন , বরং বিষয়টা এমনই যে , তাদেরকে আগ বাড়িয়ে আক্রমন করতে হবে , কারন তারা যে মুসলমান না ,সেটাই তাদের বিরাট অপরাধ। সেই অপরাধেই তাদের ওপর যখনই সুযোগ পাওয়া যাবে , তাদের ওপর আক্রমন করতে হবে , তখন যদি তারা ইসলাম গ্রহন করে , তাহলে ছেড়ে দিতে হবে , যদি তা না করে ,তাহলে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
এখন আপনারা হয়ত বলবেন , না নবী মুহাম্মদ তো কখনও কাউকে খুন হত্যা করে নি , তিনি তো শান্তির মাধ্যমে ইসলাম প্রচার করেছেন। জ্বী না , আপনি যা জানেন , তা ভুল জানেন। আপনি কোরান হাদিস পড়েন নি , তাই আপনাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল বলা হয়েছে। কারন আপনি যদি শুরু থেকেই জানতেন যে ইসলাম আসলে অস্ত্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , তাহলে আপনি হয়ত ইসলাম ত্যাগ করতেন। আমাদের হুজুরেরা সেটা জানে ,তাই তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই ‘তাকিয়া’ এর মাধ্যমে আপনাকে ভুল জানিয়েছে। কি বিশ্বাস হচ্ছে না ? তাহলে দেখুন স্বয়ং মুহাম্মদ কি বলছে তার বিজয় সম্পর্কে ——
সহিহ বুখারী :: খন্ড ৪ :: অধ্যায় ৫২ :: হাদিস ২২০:
ইয়াহ্ইয়া ইব্ন বুকাইর (র)……………আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, অল্প শব্দে ব্যাপক অর্থবোধক বাক্য বলার শক্তি সহ আমি প্রেরিত হয়েছি এবং শত্রুর মনে ভীতির সঞ্চারের (সন্ত্রাস) মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।
অর্থাৎ মুহাম্মদ যে তার ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করেছেন , সেটা সম্ভব হয়েছে সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে, শান্তির মাধ্যমে না। সুতরাং আপনাদেরকে যেসব জানান হয়েছে , শিখান হয়েছে , সেসব ভুল , মিথ্যা , এসবের সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। আর আপনার বেহেস্ত কোথায় আছে , সেটা কি জানেন? না জানলে দেখুন। এই হাদিসই ওস্তাদরা আপনার সন্তানদেরকে দেখায় –
সহিহ বুখারী :: খন্ড ৪ :: অধ্যায় ৫২ :: হাদিস ৭৩:
আব্দুল্লাহ ইব্ন মুহাম্মদ (র)…………উমর ইব্ন উবায়দুল্লাহ (র)-এরাযাদকৃত গোলাম ও তার কাতিব আবূন নাযর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ আওফা (রা) তাঁকে লিখেছিলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা জেনে রাখ, তরবারীর ছায়ার নীচেই জান্নাত।
কি দেখলেন ? আপনি আল্লাহ বিল্লাহ করলে বা মাঝে মাঝে নামাজ পড়লে বা হজ্জ কোরবানী দিলে জান্নাতে যাবেন ? সে গুড়ে বালি।এসব হলো ছেলে ভুলান গল্প। বাজে কথা। জান্নাত হলো তরবারির নিচে অর্থাৎ জিহাদের মাধ্যমেই জান্নাত পাওয়া যায় যা করতে হবে সন্ত্রাসের মাধ্যমে। কি এখনও বোঝেন নি ? আর যারা জিহাদী হয়ে শহিত হবে , তাদের মন মানসিকতা কেমন হবে জানেন ? দেখুন তাহলে —
সহিহ বুখারী :: খন্ড ৪ :: অধ্যায় ৫২ :: হাদিস ৭২
মুহাম্মসদ ইব্ন বাশশার (র)………… আনাস ইব্ন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের পর একমাত্র শহীদ ছাড়া আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্খা পোষণ করবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তার কাছে বিদ্যমান থাকবে। সে দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্খা করবে যেন দশবার শহীদ হয়। কেননা সে শাহাদাতের মর্যাদা দেখেছে।
দেখুন , যারা জিহাদ করে শহিদ হবে , তাদেরকে আল্লাহ এতটাই মর্যাদা দেবে যে তারা বার বার জিহাদ করার জন্যে দুনিয়াতে আসতে চাইবে। কি, বুঝলেন কিছু ? তাদের কাছে দুনিয়ার সকল জিনিসই অর্থহীন মনে হবে। এবার বুঝতে পারলেন – কেন আপনার সন্তানটা জীবনে কোনদিন অভাব বা দারিদ্র ভোগ না করলেও জিহাদ করে শহিদ হতে চায় ? কেন্ ইউরোপ আমেরিকায় স্বচ্ছল জীবন যাপন করেও হাজার হাজার তরুন তরুনী জিহাদ করতে সিরিয়ায় গিয়ে আই এস এ যোগ দিতে চায় ? আর আপনারা কি বলেন ? বলেন তাদেরকে নাকি ব্রেইন ওয়াশ করেছে , এসব ইহুদি নাসারাদের ষড়যন্ত্র। আরে ভাই , আপনার এইসব ফালতু কথা যদি আপনার জিহাদী ছেলের সামনে উচ্চারন করেন ,তাহলে সে কিন্তু আপনার মাথাটা ধড় থেকে সাথে সাথেই বিচ্ছিন্ন করে দেবে চাপাতির এক কোপে। কেন জানেন ? সেটাও দেখুন –
সুরা আহযাব-৩৩: ৬: নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের, তার স্ত্রীগন ও মাতার চাইতেও অধিক ঘনিষ্ঠ ——–
উক্ত আয়াতের অর্থ স্বয়ং মুহাম্মদ নিজেই করে গেছেন দেখুন –
সহিহ বুখারী :: খন্ড ১ :: অধ্যায় ২ :: হাদিস ১৪:
ইয়া’কুব ইব্ন ইবরাহীম ও আদম (র) ……… আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সা) ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার কাছে তার পিতা, সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হই।
অর্থাৎ আপনার সন্তান যখন খাটি মুমিন হবে , জিহাদী হবে , তখন তার কাছে পিতা মাতা , সন্তান সহ সব মানুষই তুচ্ছ হয়ে যাবে , তার কাছে একমাত্র প্রিয় মানুষ হবে মুহাম্মদ আর তখন মুহাম্মদ যা আদেশ করবেন , সেটাকেই মান্য করতে হবে বিনা প্রশ্নে , কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই। এমন কি এর জন্যে যদি পিতা মাতা সন্তানকে হত্যা করতে হয়, সেটাও করতে হবে। তাহলেই হওয়া যাবে খাটি মুমিন , প্রকৃত জিহাদী।
কেন সেই খবরটা ভুলে গেছেন ? যে খবরে বলা হয়েছিল সিরিয়াতে এক মা তার সন্তানকে বলেছিল – আই এস ত্যাগ সিরিয়া ত্যাগ করে করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করার জন্যে । তখন সেই সন্তান তার মাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছিল। যদি ভুলে গিয়ে থাকেন , তাহলে সেই খবরটায় আর একবার চোখ বুলিয়ে নিন –
Islamic State militant ‘killed his own mother in Syria’
এত সব ঘটনার পর যখন নিজের সন্তানকে কোন জিহাদী ঘটনার সাথে জড়িত দেখছেন , তখন হায় হুতাশ করে বলছেন – আমার ছেলে তো এ কাজ করতে পারে না ,সে তো দারুন ভদ্র , নামাজ রোজা করে – আপনি আকাশ থেকে পড়েন। কিন্তু হ্যা , আপনিই আপনার সন্তানকে জিহাদী বানিয়েছেন , আপনিই সব নষ্টের গোড়া। আপনি তাকে তার শৈশবেই জঙ্গিবাদের হাতে খড়ি দিয়েছিলেন। কিভাবে দিয়েছিলেন , সেটা মনে আছে ? না মনে থাকলে মনে করুন। দেখুন তো মনে করতে পারেন কি না।
চলবে===========================================
আপনি কি জানেন , আপনার সন্তানকে আপনি নিজেই জঙ্গি বানিয়েছেন?-পর্ব-২(পরিবেশ তৈরী) – See more at: https://istishon.blog/?q=node/21888#sthash.ftuLaqje.dpuf
আপনি কি জানেন, আপনার সন্তানকে আপনি নিজেই জঙ্গি বানিয়েছেন?- পর্ব-১(জঙ্গিবাদের হাতে খড়ি) – See more at: https://istishon.blog/?q=node/21873#sthash.ynQHfA2C.hyM5Ub67.dpuf
এই লেখা পরে আমার এখনই শহিদ
এই লেখা পরে আমার এখনই শহিদ হতে মন চাচ্ছে, আমি অনেক দিন যাবত চেষ্টা করছি কোন জিহাদি সংগঠনে যোগ দেয়ার জন্য কিন্তু খুজে পাচ্ছি না, যাদেরকে পাচ্ছি তারাও বলছে রিকক্রমেন্ট এখন বন্ধ,সব সিট ফিলাপ হয়ে গেছে,সময় হলে বলব, কি যে করি, আল্লাহ পাক কি আমাদের মত পাপিষ্টকে এত মহান সুযুগ কখনো দিবে?